পুরুষদের লেবাস কেমন হবে

ইসলামিক জীবনধারায় পুরুষদের লেবাসের গুরুত্ব নিচে বর্ণনা দেওয়া হলো
১. লেবাস যেন নাতি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ অবশ্যই ঢাকা থাকে। যেহেতু এটুর অঙ্গ পুরুষের লজ্জাস্থান। ২. "এমন পাতলা কাপড় পরিধান করা যাবে না, যাতে ভিতরের চামড়া বা শরীরের আকৃতি প্রকাশ পায়।
৩. এমন আট-সার্ট না হয়, যাতে দেহের উঁচু-নিচু প্রকাশিত হয়ে পরে।
৫. মহিলাদের সেবাসের অনুরূপ না হয়।
৬. জাঁকজমকপূর্ণ প্রসিদ্ধজনক না হয়।
৭. গাঢ় হলুদ বা জাফরানী রঙের যেন না হয়। আমর ইবনে আস (রা) বলেন, আল্লাহর রাসূলদের একদা আমার দেহে দুটি জাফরানী রঙের কাপড় দেখে বললেন, "এগুলো কাফেরদের কাপড়। কাজেই তুমি তা পরো না।" (সহীছন মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৩২৭)
৮. লেবাস যেন রেশমী কাপড়ের না হয়।
রাসুল ট্রিী বলেন, সোনা ও রেশম আমার উম্মতের নারীদের জন্য হালাল এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে। দুনিয়ার রেশম বন্ধু তারাই পরবে, যাদের আখিরাতে কোন অংশ নেই উমর (বা) বলেন, রাসুল রেশমের পোশাক পরতে নিষেধ করেছেন। তবে দুই, তিন অথবা চার আঙ্গুল পরিমাণ (অন্য কাপড়ের সঙ্গে জুড়ে। ব্যবহার করতে অনুমতি দিয়েছেন। অমানুরূপ কোন চর্মরোগ প্রভৃতিতে উপকারী হলে তা ব্যবহারে অনুমতি আছে।
৯. পরিহিত লেবাস (পায়জামা, প্যান্ট, লুঙ্গি, কামিস প্রকৃতি) যেন পায়ের গাঁটের নিচে না যায়। মহানবী ডাউন বলেন, টাখনুর নিচের অংশ লুঙ্গি জাহান্নামে। (সহীহ বুখারী "মু'মিনের লুঙ্গি পায়ের গিরা পর্যন্ত। এ (অর্ধেক রণা) থেকে গাঁট পর্যন্ত অংশের যে কোনও স্থানে হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু এর নিচের অংশ জাহান্নামে যাবে।" এরূপ ৩ বার বলে তিনি পুনরায় বললেন, "আর কিয়ামতের দিন আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি তাকিয়েও দেখবেন না, যে অহংকারের সাথে নিজের লুঙ্গি (গাঁটের নিচে) ছেঁচড়ে নিয়ে বেড়ায়।" আল্লাহর রাসুল এর সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয় লেবাস ছিল কামিস (ফুল-হাতা প্রায় টাখনুর উপর পর্যন্ত লম্বা জামা বিশেষ। যেমন তিনি চেক-কাটা চাদর পরতে ভালোবাসতেন। (সহীহুল বুখারী, দহীহ মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৪০০৪) তিনি মাথায় ব্যবহার করতেন পাগড়ী। তিনি কালো রঙের পাগড়ীও বাঁধতেন। (সুনানে আবুদাউদ ৪০৭৭, ইবনে মাজাহ ৩৮৪) আল্লাহর রাসূল ও সাহাবা তথা সলফদের যুগে টুপীও প্রচলিত ছিল। যেমন সে যুগে সেলোয়ার বা পায়জামাও পরিচিতি ছিল। মহানবী পায়জামা ক্রয় করেছিলেন। তিনি ইহরাম বাঁধা অবস্থায় হাজীদেরকে পায়জামা পরতে নিষেধ করেছেন। অবশ্য লুঙ্গি না পাওয়া গেলে পায়জামা পরতে অনুমতি দিয়েছেন। (সহীহুল বুখারী, সহীত মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ২৬৭৮) আব্দুল্লাহ ইবনে
আব্বাস (রা) যখন লুঙ্গি পরতেন, তখন লুঙ্গির সামনের দিকের নিচের অংশ পায়ের পাতার উপর ঝুলিয়ে দিতেন এবং পেছন দিকটা (গাঁটের) উপরে তুলে নিতেন। এরূপ পরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, 'আমি আল্লাহর রাসূলটিকে এরূপ পরতে দেখেছি। তিনি আরো বলেন, "উত্তম আদর্শ, উত্তম বেশভূষা এবং মিতাচারিতা নবুওয়তের ২৫ অংশের অন্যতম অংশ।। সুনানে আবু দাউদ, সহীহুল জামে' ১৯৯৩)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যার চুল এলোমেলো ও অগোছালো।
তিনি বললেন: “এমন কি সে কোনো কিছু পায় না যার মাধ্যমে সে তার মাথা (চুল) ঠিকঠাক করে নেয়?
عن أبي الأحوص، عن أبيه:
أتيت رسول الله ﷺ وعليّ ثوب دون، فقال: "ألك مال؟" قلت: نعم، من كل المال قد آتاني الله، قال: "فإذا آتاك الله مالا، فلير أثر نعمته وكرامته عليك".
বাংলা অনুবাদ: আবু আল-আহওয়াস তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন: আমি একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট উপস্থিত হলাম। তখন আমার পরনে ছিল নিন্মমানের (পুরানো/মলিন) পোশাক।
তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন:— ‘তোমার কি ধন-সম্পদ আছে?’আমি বললাম: ‘হ্যাঁ, আল্লাহ আমাকে নানা রকম সম্পদ দিয়েছেন।’
তখন তিনি বললেন:— ‘যখন আল্লাহ তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন, তখন তাঁর এই নেয়ামতের প্রভাব ও মর্যাদা তোমার পোশাকে-চলনে প্রকাশ পাক।’”
সুনান ইবনু মাজাহ (হাদিস: ৩৬০৫) সনদ: সহীহ (সহীহুল জামে ৫৫৩০)
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:
"كلوا واشربوا وتصدقوا والبسوا، ما لم يخالطه إسراف أو مخيلة"
অর্থ: “তোমরা খাও, পান কর, দান কর, ও পোশাক পর — যতক্ষণ না তাতে অপচয় (ইসরাফ) বা অহংকার (মখীলাহ) মিশে যায়।”