সংবাদ শিরোনাম

পটাশে কষ্টিকাম নিয়ে আলোচনা

 প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন   |   বিজ্ঞান

পটাশে কষ্টিকাম নিয়ে আলোচনা

ডাঃ মোঃ আকবর আলী ,                                                                                                                                         ( হোমিওপ্যাথিক ফিজিশিয়ান),                                                                                                                                                ডি এইচ এম এস,  এম এ ঢাকা

কষ্টিক পটাশের অনেক অসাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা খুবই নির্ভরযোগ্য।

দুর্বলতা: কষ্টিক পটাশে অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা যায়, যা পটাশিয়াম লবণের মূল লক্ষণ। এর মাধ্যমে ক্রমে পক্ষাঘাত এবং স্নায়ুবিক স্পন্দন, কোরিয়া, আক্ষেপ, এবং মৃগী রোগ সৃষ্টি হতে পারে। কষ্টিক পটাশে পক্ষাঘাত সাধারণত দেহের ডানদিকে হয় (ল্যাকেসিসের ক্ষেত্রে বাঁদিকে হয়)।পক্ষাঘাত সাধারণত দেহের ডানদিকে হয় (ল্যাকেসিসের ক্ষেত্রে বাঁদিকে হয়)।

স্নায়ু সংক্রান্ত পীড়া (Neuralgia): কষ্টিক পটাশে স্নায়ু পীড়া সাধারণত দুর্দম প্রকৃতির হয়ে থাকে। অন্যান্য ঔষধগুলি ব্যর্থ হলে কষ্টিক পটাশে উপকার পাওয়া যায়।

মানসিক লক্ষণ: কষ্টিক পটাশে বিষাদ, বিমর্ষতা, আশাশূন্যতা এবং দীর্ঘস্থায়ী শোক বা দুঃখ থেকে উৎপন্ন মনোবিকারের লক্ষণ দেখা যায়, যা ইগ্নেসিয়া, নেট্রাম মিউরিয়েটিকাম এবং ফসফরিক অ্যাসিডের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

চোখ ও কান: কষ্টিক পটাশে চোখের সামনে ঝিলিমিলি বা মেঘের মতো দেখতে হতে পারে, যা ছানি পড়ার পূর্বাভাস হিসেবে ধরা হয়। কানে শোঁ শোঁ শব্দ, ঠুন ঠুন, ঠং ঠং, গুন গুন ইত্যাদি শব্ধ শুনতে পাওয়া কষ্টিক পটাশের একটি বিশেষ লক্ষণ।

মুখমণ্ডল: মুখমণ্ডল হরিদ্রাবর্ণ হতে পারে (যা জন্ডিস নয়), বাত বা সোরাদোষজনিত পক্ষাঘাত এবং মুখমণ্ডলের স্নায়ুশূলও দেখা যায়। চোয়ালের আড়ষ্টতা (stiffness of the jaws) এবং মুখ খুলতে না পারাও কষ্টিক পটাশের লক্ষণ।

জিহ্বা ও গলাধঃকরণ: জিহ্বার পক্ষাঘাত এবং অস্পষ্ট বাক্য উচ্চারণ কষ্টিক পটাশে দেখা যায়। গলার মধ্যে শুকনো কাশি, টাটানো এবং ছাল উঠে যাওয়ার অনুভূতি থাকে।

পরিপাকতন্ত্র: পাকস্থলীতে চুন পোড়ানোর মতো অনুভূতি এবং বাতোদগার দেখা দেয়। কষ্টিক পটাশে মলদ্বারে উপসর্গ, যেমন কোষ্ঠবদ্ধতা, নিস্ফল মলত্যাগের প্রবৃত্তি, মলদ্বারে টান পড়া, এবং অর্শের সমস্যাও দেখা যায়।

মূত্রযন্ত্র: কষ্টিক পটাশে মূত্রাশয়ের কার্যক্রমেও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন, মূত্রমার্গের মুখে চুলকানি, অবিরত নিস্ফল মূত্রবেগ, এবং মূত্রপাতের সময় ফোঁটা ফোঁটা মূত্রপাত।

শ্বাসযন্ত্র: কষ্টিক পটাশে শ্বাসযন্ত্রেও লক্ষণ দেখা যায়। যেমন, প্রাতঃকালে স্বরভঙ্গের বৃদ্ধি, শুকনো কাশি, এবং গলাধঃকরণে টাটানো ও ছাল উঠে যাওয়ার অনুভূতি থাকে।

হাত–পা ও পিঠ:কষ্টিক পটাশে পিঠ, হাত, পা ও কোমরে আড়ষ্টতা, পেশীর দুর্বলতা, টান ধরা এবং হাঁটতে কষ্ট হওয়া দেখা যায়।

চর্মরোগ: কষ্টিক পটাশ খোসপাচড়া বা একজিমা ধরনের চর্মরোগে কার্যকরী।কষ্টিক পটাশ একটি অত্যন্ত কার্যকরী ঔষধ, যা নানা ধরনের রোগে উপকারী, বিশেষত স্নায়ু, পরিপাকতন্ত্র এবং মূত্রাশয়ের সমস্যাগুলিতে।

কষ্টিকামের সঙ্গে সম্পর্কিত সতর্কতাগুলি:

ফসফরাসের সঙ্গে সম্পর্ক: কষ্টিকাম এবং ফসফরাস কখনই একে অপরের পরবর্তী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। এই দুই ঔষধের মধ্যে একটি প্রতিবন্ধক সম্পর্ক রয়েছে, অর্থাৎ, একটি ঔষধ ব্যবহারের পর অন্যটি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

প্রতিবন্ধক অবস্থার জন্য:

সীসা (Lead) থেকে উদ্ভূত পক্ষাঘাতের ক্ষেত্রে কষ্টিকাম উপকারী হতে পারে। এটি স্নায়ু বা পেশীতে পক্ষাঘাত সৃষ্টি হওয়া সমস্যার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

পূরক ঔষধ:

কষ্টিকামের সঙ্গে কার্বোভেজ পূরক ঔষধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি কষ্টিকামের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।

তুলনীয় ঔষধ:

কষ্টিকামের কিছু তুলনীয় ঔষধের মধ্যে রাসটক্স (Rhus tox), আর্সেনিক (Arsenicum album), এবং এমন ফস (Mucous membrane paralysis of face) উল্লেখযোগ্য। এই ঔষধগুলির লক্ষণ ও কার্যক্রম কষ্টিকামের সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য রাখে, বিশেষত মুখমণ্ডলের পক্ষাঘাতের ক্ষেত্রে।

সঠিক আবহাওয়া:

কষ্টিকামের প্রভাব সাধারণত শুষ্ক, ঠান্ডা, পরিষ্কার আবহাওয়ায় বাড়ে এবং ঠান্ডা বাতাসে খারাপ হতে পারে। গাড়িতে চলার সময়ও এর প্রভাব বৃদ্ধি পেতে পারে।

এর বিপরীতে, ভিজে বা স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, গরম স্থান (যেমন বিছানার গরম) কষ্টিকামের লক্ষণগুলিকে উপশম করতে সাহায্য করে।