সংবাদ শিরোনাম

পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ এবং ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়মের বিরুদ্ধে উপদেষ্টার কঠোর হুঁশিয়ারি

 প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন   |   জাতীয়

পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ এবং ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়মের বিরুদ্ধে উপদেষ্টার কঠোর হুঁশিয়ারি

শ্রীপুর (গাজীপুর), ৫ আশ্বিন (২০ সেপ্টেম্বর): 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ এবং ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আইন প্রয়োগ মানে শুধু জরিমানা নয়; এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা ও জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে।

উপদেষ্টা গাজীপুরের শ্রীপুরে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘Strengthening Environmental Regulatory and Enforcement Capacity for a Sustainable Bangladesh’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।  

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ডাইং কারখানা, সিমেন্ট কারখানা ও ইটভাটার মতো প্রধান দূষণ উৎসকে অগ্রাধিকার দিয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সবচেয়ে দূষণকারী শিল্পগুলোকে চিহ্নিত করে বাজেট ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দূষণকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন। তথ্য উন্মুক্ত করলে জনগণ নিজেরাই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। 

উপদেষ্টা বন্যা প্রবাহ এলাকা বা পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল স্থানে বর্জ্য ফেলার কেন্দ্র স্থাপনের ছাড়পত্র দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। এ ধরনের ছাড়পত্র অবৈধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। রাজনৈতিক চাপ থাকলেও আপত্তি জানাতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বদলি হোন, কিন্তু পরিবেশের সঙ্গে আপস করবেন না। তিনি পরিবেশ ছাড়পত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সকল লাল ক্যাটাগরির শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (EIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জনগণের মতামত বিবেচনা করার আহ্বান জানান।

একটি দূষণকারী সিরামিক কারখানাকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, দূষণকারীদের শাস্তি দিতে হবে, পুরস্কৃত করা নয়। এছাড়া, অভিযোগ নিষ্পত্তি ডিজিটালাইজেশন, অভিযোগ ট্র্যাক করার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসম, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, বেস্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত বক্তব্য দেন।

পরে উপদেষ্টা পরিবেশ অধিদপ্তরের সারাদেশ থেকে আগত কর্মকর্তাদের তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ সুরক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

#