অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় IAEA-এর ৬৯তম সাধারণ সভায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

ভিয়েনা, ১৮ সেপ্টেম্বর:
নিউক্লিয়ার কার্যক্রমে জড়িত বিশ্বের ১৮০টি সদস্য রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত IAEA এর ৬৯তম সাধারণ সভায় বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেছে। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আনোয়ার হোসেন।
সভায় বক্তৃতাকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব বলেন, বাংলাদেশ এ সংস্থার ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য পরমাণু’ মূলমন্ত্রের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে IAEA একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে তিনি মন্তব্য করে।
সচিব আরো বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জ্বালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং পানি ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর বাস্তব সমাধানে সহায়ক হতে পারে পারমাণবিক প্রযুক্তি। বাংলাদেশ IAEA-এর উদ্যোগগুলো যেমন Atoms4Food, Atoms4NetZero, Rays of Hope এবং NUTEC Plastics মূল্যবান বলে মনে করে যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত স্থায়িত্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ছয়টি IAEA প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ শীঘ্রই এ সংস্থার সাথে নতুন দেশীয় কর্মসূচি কাঠামো চূড়ান্ত করার জন্য উন্মুখ। সংস্থাটির সহায়তায় আইসোটোপ হাইড্রোলজির মাধ্যমে বাংলাদেশে ফসলের উৎপাদন এবং জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নত হয়েছে, যা টেকসই খাদ্য সরবরাহে সহায়তা করেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ উন্নয়ন পরিকল্পনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করেছে মন্তব্য করে সচিব বলেন, রূপপুরে দুটি VVER-1200 রিঅ্যাক্টর নির্মাণের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বাংলাদেশের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, IAEA-এর সহযোগিতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় বাংলাদেশ এ খাতে আরো সুসংগঠিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি উন্নত ক্যান্সার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে IAEA-এর ‘Rays of Hope’ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ উদ্যোগ দেশের স্বাস্থ্যখাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।