বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

ঢাকা, ১৯ শ্রাবণ (৩ আগস্ট):
‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫’ উপলক্ষ্যে আজ ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক আলোচনা সভা, অনুদানের চেক বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই শহিদ পরিবার এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ। তিনি শহিদদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি শহিদদের আত্মত্যাগ ও আহতদের ত্যাগের বিষয়টি উপলব্ধি করে দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠনে সরকারি-বেসরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতে জুলাই শহিদ পরিবার ও আহতদের পাশে থাকারও আশ্বাস দেন।
আলোচনা সভায় জুলাই শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ মোঃ জান শরিফের স্ত্রী রহিদুন সাজবা বানু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, পিতৃস্নেহ বঞ্চিত মেয়ে এবং তাদের পরিবারের উপর ঘটে যাওয়া নির্মমতা কোনো অনুদান দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, শহিদরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, কিন্তু বর্তমানে তাদের পরিবারের খোঁজ কেউ রাখছে না।
আহত জুলাই যোদ্ধা মোঃ ফয়েজ, যিনি একটি চোখ হারিয়েছেন, তার ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা দেন। আরেক আহত যোদ্ধা মোঃ রাকিব হোসেন বলেন, তাদের ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে উপযুক্ত বিচার এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সবুর হোসেন ও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিম।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হওয়া ১৭টি পরিবারকে এবং দৃষ্টিশক্তি হারানো ৪ জন ও গুরুতর আহত ৪ জনসহ মোট ২৫ জনকে এক লাখ টাকা করে মোট পঁচিশ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। এর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে গত ২০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে 'জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন'-কে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে জুলাই শহিদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, আহত যোদ্ধাদের দ্রুত সুস্থতা এবং দেশের সার্বিক কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।