সংবাদ শিরোনাম

শাল গাছ লাগানো, সীমানা চিহ্নিতকরণ কাজের উদ্বোধন করলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

 প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১১:০৩ অপরাহ্ন   |   জাতীয়

শাল গাছ লাগানো, সীমানা চিহ্নিতকরণ কাজের উদ্বোধন করলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মধুপুরের অবক্ষয়িত শালবন পুনরুদ্ধারে সরকার বদ্ধপরিকর। এবার ৭৫০ একর এবং আগামী তিন বছরে ৬ হাজার ৬১০ একর জায়গায় শাল রোপণ করা হবে। তিনি বলেন, শালের পাশাপাশি সহযোগী বৃক্ষরোপণ চলছে, যাতে স্থানীয় জনগণকেও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। 

টাঙ্গাইল বন বিভাগের মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দোখলায় আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। 

উপদেষ্টা বলেন, শালবনের সীমা চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে এবং ‘রাজাবাড়ী’ এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, শালবনে শুধু শালগাছই থাকবে। ১০০ টি গাছের মধ্যে ৭০ টি শাল এবং ৩০ টি সহযোগী গাছ থাকবে কিন্তু কোনো বিদেশি গাছ থাকবে না। 

উপদেষ্টা আরো বলেন, ১২৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হবে, তবে বনজমি দখলের মামলা এবং যেসমস্ত মামলায় বন বিভাগের লোকজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, কোনোভাবে এখানের জনগোষ্ঠীদের হয়রানি করা যাবে না। আমি বনবিভাগের লোকজনকে নির্দেশনা দিচ্ছি। তিনি বলেন, এটি কোনো প্রতিশ্রুতি নয়, একটি ঘোষণা। বনবিনাশ রোধে বনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্রথাগত বনবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার কথাও জানান তিনি। গারো জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তবে শত শত একর জমিতে আনারস, কলা চাষ করতে পারবেন না। শত শত একর জায়গায় হরমোন ও পেস্টিসাইড দিয়ে শালবন নষ্ট করার সুযোগ পাবেন না।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন বিভাগের প্লট কেউ পাবে না – না ধনী, না দরিদ্র। নদীভাঙা বা দরিদ্রদের জন্য বন্দোবস্ত হবে খাসজমিতে, বনভূমিতে নয়।

আলোচনার আগে উপদেষ্টা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক হাজার শালগাছের চারা রোপণের মাধ্যমে শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করেন। 

পরে তিনি রাজাবাড়ী এলাকায় ‘স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং শালবনে ময়ূর ও পুকুরে কাইট্টা মাছ অবমুক্ত করেন।

সকালে পরিবেশ উপদেষ্টা টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে ভূমি মেলা এবং ৫ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান। এছাড়া, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ নাভিদ শফিউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ জামান, মধুপুরের জয়েনশাহী আদিবাসী পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় মৃ এবং সভাপতি ইউজেন নকরেক।


দীপংকর/মেহেদী/ফেরদৌস/সঞ্জীব/শামীম/২০২৫/১৮৫৫ঘণ্টা